শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ কুমিল্লাবাসী

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
মার্চ ১৪, ২০২০
news-image

অনলাইন ডেস্ক :

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ কুমিল্লাবাসী, দেখার যেন কেউ নেই! করোনা আতংকে ভীত নাগরিকরা ডেঙ্গুর ভয় ভুলেচুপ করেই অনেকটা সহ্য করে যাচ্ছেন মশার কামড়। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা বলছেননিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি চলছে মশা নিধন কর্মকান্ডও।

শীত কমার সাথে সাথে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকেই কুমিল্লা নগরীতে বাড়ে মশার উৎপাত। গত দেড়মাস ধরে মশার উৎপাত যেন সীমা ছাড়াচ্ছে। নাগরিকদের দাবী, মশা তাড়ানোর জন্য ব্রাপক পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

গত বছর ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ঠেকানোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মশা নিধনে মৌসুমের আগেই মাঠে নেমেছে প্রশাসন। ডেঙ্গু নিয়ে জেলাপ্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ সভায় জেলা সিভিল সার্জন জানান, ডেঙ্গু ঠেকাতে সবার আগে সাধারণ মানুষকে নিজে সচেতন হয়ে বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রচলিত ঔষধের বাইরে গিয়ে ডেঙ্গুবাহী মশার কীট পর্যালোচনা করে নতুন ঔষধ ছিটানোর জন্যও পরামর্শ দেন তিনি।

হুট করে মশার উপদ্রবে এডিস মশা থেকে ছড়ানো ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আতংকিত অনেকে। গত কয়েক বছরে ডেঙ্গু জ্বরের যে প্রাদুর্ভাব ছিলোতা এবছর ভাবিয়ে তুলছে সাধারণ মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই জানিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ক্যাম্পাস,অশোকতলা, বজ্রপুর, শাসনগাছা, চর্থা, টমছমব্রীজ, বাঁগিচাগাও, রেইসকোর্স, ছেটরা, চকবাজার, মৌলভী পাড়া, শুভপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় মশার উৎপাত মাত্রা ছাড়িয়েছে।

রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়া হোসাইন জানান, রাজগঞ্জ এলাকায় দিনেরাতে মশার অত্যাচার। দিনের বেলাতেও মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখি। সিটি কর্পোরেশন থেকে সব জায়গাতেই ব্যাপক হারে মশক নিধন কার্যক্রম এখনি শুরু করা দরকার।

হারুন স্কুল এলাকার অধিবাসী দ্বীন মোহাম্মদ জানান, মশার যে উপদ্রব বেড়েছে তা কি ধরনের মশা তা আমরা সাধারণ মানুষ কিভাবে বুঝবো? এখন যে মশা কামড়াচ্ছে তা কি এডিস মশা কি না জানি না। আমার বাসায় শিশু সন্তান আছে, তাকে মশা থেকে বাঁচাতে যতক্ষন সম্ভব মশারি টানিয়ে রাখি।  

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় হাজার ৫৪ জন। এর মধ্যে প্রায় জন চিকিৎসা নিয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা না গেলেও আগেষ্টের দিকে এই রোগে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে আশংকাজনক হারে। জনমনে এই রোগ নিয়ে আতংক ছড়িয়ে পরে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রশাসনের তৎপরতায় দ্রুতই কমে আসে এই রোগের প্রকোপ।

এবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে আগে থেকেই সতর্ক প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগ। গত ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে জেলা প্রশাসন সিভিল সার্জনের যৌথ সভায় নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রচলিত ঔষধের বাইরে গিয়ে ডেঙ্গুবাহী মশার কীট পর্যালোচনা করে নতুন ঔষধ ছিটানোর জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন।

সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান জানান, পুরোনো বছরের ঔষধ এবছর কাজ না করতে পারে। তাই স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে পরামর্শ করে সিটি কর্পোরেশনকে নতুন ঔষধ সরবরাহ করতে হবে।  যার যার অবস্থানের আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গুর জন্য আলাদা একটি ওয়ার্ড খোলা হবে, জরুরি পর্যবেক্ষক দল থাকবে এবং সেবা প্রদানকারীসচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও আলাদা টিম থাকবে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিটি কর্পোশনের বর্জ্য নিষ্কাশন কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, ইতিমধ্যে কুমিল্লা সিটির সব ওয়ার্ডে ড্রেন নালা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

আর পড়তে পারেন