শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জীবনযুদ্ধ থেমে নেই ৩২ বছর বয়সী ২৬ ইঞ্চি প্রতিবন্ধী ফরিদের

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
অক্টোবর ১২, ২০২০
news-image

ডেস্ক রিপোর্টঃ

পিরোজপুরের গৌরীপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা গ্রামের প্রতিবন্ধী ফরিদ অন্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্থানীয় মালিয়ার হাটে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে কোনোরকমে চলছে তার ছোট্ট দোকান।

তার দাবি, একখণ্ড জমি বরাদ্দ পেলে সেখানে একটি ঘর তুলে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন। ফরিদ ৩২ বছর বয়সে একটিবারের জন্যও দুই পায়ে দাঁড়াতে পারেননি। দুই হাতও তার অসাড়। ৩২ বছর বয়সে তার শরীর বেড়েছে মাত্র ২৬ ইঞ্চি। শারীরিক বাধাকে উপেক্ষা করে ২০ বছর আগে জীবনযুদ্ধে নামেন তিনি।

২০ বছর ধরে মায়ের কোলে চড়ে সকালে বাড়ি থেকে বের হন দোকানের উদ্দেশে। দিনভর দোকানের বেচাকেনা করেন। নিজে কোনো ক্রেতার হাতে মালপত্র তুলে দিতে পারেন না। দাম পরিশোধ করে ক্রেতারা নিজে নিজেই দোকান থেকে মালপত্র নেন। বেচাকেনা শেষে আবার রাত ১০টার দিকে মায়ের কোলে চড়ে বাড়িতে ফেরেন।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ফরিদ হোসেন আত্মনির্ভরশীল একজন মানুষ। গৌরীপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা গ্রামের কৃষক বারেক মৃধা ও রওশন আরা বেগম দম্পতির চার ছেলের মধ্যে ফরিদ হোসেন তৃতীয় সন্তান। ফরিদ হোসেনের অন্য ভাইয়েরা পরিপূর্ণ শারীরিক গঠন নিয়ে বেড়ে উঠলেও শুধু তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েও কোনো লাভ হয়নি।

মালিয়ারহাট বাজারের পাকা সেতু সংলগ্ন ছোট পরিসরে একটি মুদি দোকান চালান তিনি। নাম ফরিদ স্টোর। ২০ বছর ধরে মালিয়ারহাট বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে চার হাজার টাকার পণ্য তুলে ব্যবসা শুরু করেন ফরিদ। এখন তার দোকানের ব্যবসার পরিধি বেড়েছে।

সম্প্রতি ফরিদের এমন অসহায় অবস্থা দেখে স্থানীয় এক সাংবাদিকের চেষ্টায় উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে একটি হুইলচেয়ার পেয়ে এখন অন্যের সাহায্যে দোকানে আসা-যাওয়া করেন।

ফরিদের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি জানান, শত কষ্টের গড়া এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইতোপূর্বে কয়েকবার চুরি হয়েছে। তাই দোকানে তেমন কোনো মালামাল নেই। কষ্ট আর অভাবের সঙ্গে তিনি প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধ করছেন।

তিনি আরও জানান, ভিক্ষুকরা এসে বিভিন্ন সময় তার কাছে ভিক্ষা চান। কিন্তু ভিক্ষা না দিয়ে তাদের ভিক্ষার পেশা ছেড়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। প্রতিবন্ধী ফরিদের জীবনে একটু সুখ দিতে দেশের বিত্তবান ও পরোপকারী হৃদয়বান ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতা পেলে তার ব্যবসার পরিসর সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। এজন্য সবার কাছে দোয়া ও সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন ফরিদ।
সূত্র:যুগান্তর

আর পড়তে পারেন