শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চৌদ্দগ্রামে দাদা কর্তৃক নাতনি ধর্ষণ

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
আগস্ট ৮, ২০১৭
news-image

ষ্টাফ রিপোর্টার ঃ তুফান কান্ডসহ সারাদেশে একের পর এক ধর্ষনের ধারাবাহিকতার সর্বশেষ সংযোজন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দাদা কর্তৃক নাতনিকে ধর্ষনের ঘটনা। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় মাত্র ভর্তি হওয়া সামিয়া (ছদ্মনাম) নামের মাত্র ৫ বছর বয়সের শিশুটি ধর্ষনের শিকার হয়ে বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের কর্তাম গ্রামে।

পাশবিক এ ঘটনার শিকার হয়ে বাদিদের অব্যাহত হুমকি ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে থানায় মামলা করতে পারেনি মিশুটির পরিবার ও স্বাভাবিক চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে শিশুটি। অবশেষে পরিবারটি ৮ আগষ্ট মঙ্গলবার কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযুক্ত ধর্ষক আব্দুল মালেকসহ (৬০) তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন ভিকটিমের মাতা। মামলার অপর আসামীরা হলো; মো ঃ মাসুদ (২৯) ও মো ঃ রাজিব (২৮)। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি শুরু থেকেই জানার পরেও আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের কর্তাম গ্রামের এক প্রবাসীর মিশু কন্যা ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী ভিকটিম সামিয়া (ছদ্মনাম) ও ১নং আসামী আব্দুল মালেক (চাচাত দাদা) সম্পর্কে দাদা-নাতনি। ঘটনার দিন গত ২৬ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় ভিকটিমকে কৌশলে নিজ ঘরে নিয়ে যায় দাদা আব্দুল মালেক। বেশ কিছুক্ষন পর ভিকটিম সামিয়ার চিৎকার শুনে ওই ঘরের দিকে যায় সামিয়ার মা। এ সময় সামিয়া কাঁদকে কাঁদতে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে ঘটনা সব খোলে বলে। এরপরই তাৎক্ষনিক মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গুনবতী বাজারে নিয়ে যায়। স্থানীয় ডাক্তার বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা প্রদান করে এবং ৭টি ইনজেকশন প্রদান করেন। কিন্তু ভিকটিম ছামিয়ার শারিরীক পরিস্থিতির উন্নতি না দেখে চিকিৎসক তাকে কুমিল্লায় প্রেরণের পরামর্শ দিলে পরিবার তাকে গত ৫ আগষ্টে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।

ভিকটিমের মাতা জানান, ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে হওয়ায় ১নং আসামীর দুই ছেলে বিভিন্নভাবে আপোষ মিমাংশা করে দিবে বলে আমাদের মামলা প্রদান থেকে বিরত রাখে। এমনকি মেয়ের শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখে তারা চৌদ্দগ্রামের কিংবা কুমিল্লার কোন সরকারী হাসপাতালে না নিয়ে ফেণীর যে কোন বে-সরকারী হাসপাতালে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। সর্বশেষ গত ৪ আগষ্ট তারা এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মিমাংশা করে দিবে বলে আমার নিকট থেকে মেয়ের চিকিৎসাপত্রের কাগজের ফটোকপি নিয়ে যায়। তারা এ সময় বলে, কাগজপত্র যেহেতু আছে সেহেতু ৫-৬ মাস পরেও মিমাংশা করা যাবে। এ সময় তারা আমাকে আইনের আশ্রয় না নিতে এবং বিয়ষটি কাউকে না জানাতে চাপ সৃষ্টি করে। স্বামীর বিদেশে থাকায় আমার একাকিত্বের সুযোগে তারা আমাকে আইনের আশ্রয় এমনকি চিকিৎসা গ্রহণ থেকেও বঞ্চিত রাখে মেয়েটিকে। ভিকটিমের মাতা ববিতা আরও জানান, আইনের আশ্রয় নেওয়ার খবর পেয়ে আসামীরা বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করছে। বর্তমানে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে যাওয়া নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল ফয়সাল জানান, ধর্ষনের ঘটনাটি কুমিল্লা কোতয়ালী থানা সূত্রে জানার পরে আমি নিজ থেকে মেয়ের মায়ের সাথে যোগাযোগ করি এবং হাসপাতালে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু মেয়ের পরিবার থানায় আসবে বলেও কোন ধরনের অভিযোগ কিংবা মামলা দায়েরের জন্য আসেন নাই। আজকেই শুনলাম আদালতের মাধ্যমে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালতের কপি হাতে পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আর পড়তে পারেন