শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গোমতীর ভাঙ্গনে বিলীন দাউদকান্দির বসতবাড়ি -গাছপালা

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
মে ২৬, ২০১৮
news-image

 

জাকির হোসেন হাজারী,দাউদকান্দিঃ
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজনে ফুলে উঠেছে গোমতীর পানি। আর এই পানি প্রবল  োতধারা নামতে শুরু করায় কুমিল্লার দাউদকান্দি খোসকান্দি, লক্ষিপুরসহ গোমতী নদীর তীরবর্তী বাড়ি ভাঙ্গতে শুরু করেছে। প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নেই কোন পদক্ষেপ। গত কয়েকদিনের ভাঙ্গনে এখানকার চিত্র পরিবর্তন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ভয়াবহতায় কয়েকশ বসতবাড়ী ও গাছ গাছালী বিলীন হয়ে যাচ্ছে রাক্ষুসে গোমতীর পেটে। হুমকির মুখে রয়েছে নদী পাড়ের আরো অনেক বসতবাড়ী, কবরস্থান, বিদ্যুতের খুটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে যে কোন সময় গোমতী বেরীবাঁধসহ দাউদকান্দি তিতাস উপজেলার কয়েকটি গ্রাম বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।

শুক্রবার সকালে সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের কর্নেল আব্দুল জাব্বারের বাড়ীর আমীর হোসেন, কালা মিয়া, রমজান ভান্ডারী, মতিন ড্রাইভার ও মাওলানা আমীর হোসেন তাদের বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। সংবাদকর্মীদের দেখে নারী পুরুষসহ ছেলে বুড়ো এগিয়ে এসে বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবৎ নদী ভাঙ্গনে আমরা আতংকে আছি। বসতঘরগুলো খুলে ছেলে মেয়ে নিয়ে খোলা আকাশে দিন যাপন করছি , আপনাদের ছাড়া কোন স্যার এ পর্যন্ত এখানে আসেনি। দিনরাত সবসময়ই আতংকে আছি আমরা। বিগত মৌসমে গ্রামবাসী মিলে বালির বস্তা ও বাশঁ দিয়ে বাঁধ নির্মান করে কিছুটা রক্ষা হলেও এবছর বর্ষার শুরুতেই টানা বৃষ্টি ও ওজানের ঢলের কারনে ভাঙ্গন থামানো যাচ্ছে না। তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া মোল্লা বাড়ীএলাকায় এক কিলোমিটার ও দাউদকান্দির খোসকান্দি,চান্দের চর হয়ে লক্ষিপুর চকের বাড়ী পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গোমতী নদীর তীরবর্তী হরিপুর বাজার, দুলারামপুর, আসমানিয়া, নারান্দিয়া, জিয়ারকান্দি, সোলাকান্দি, লালপুর, মৌলুভীখালপার, নুরপুর সংলগ্ন অংশে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের লোকজন। গত ২০ বছরে এসব এলাকার ২-৩শ পরিবার তাদের বসতবাড়ী ও জমি হারিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায়। এভাঙ্গন রোধ করা না হলে আরো কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। ভাঙ্গনের শিকার লক্ষিপুর গ্রামের মোবারক ও আমীর হোসেন বলেন, গত দশ বছরে আমাদের আবাদি জমিসহ বসতবাড়ী বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে তৈরি করা বাড়িও আজ তিন দিনে গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসে গোমতী। এখন আমাদের পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। একই গ্রামের মতিন ড্রাইভার বলেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে বিদ্যুতের খুটি হেলে পড়লে কয়েকবার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানালেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। এখন খুটির গোড়ার মাটি না থাকায় জমিনের উপর পড়ে রয়েছে যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙ্গন এলাকায় আমাদের কয়েকটি খুটি ঝুঁকিপুর্ন হওয়ায় নতুন লাইন নির্মানের কাজ চলছে, আশা করছি ২/৩দিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে।

আর পড়তে পারেন