বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তিতাসে প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা ॥ আটক ৬

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
জুন ১৯, ২০১৭
news-image

জাকির হোসেন হাজারী, দাউদকান্দিঃ
কুমিল্লার তিতাসে বাড়ীর সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা। বড় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের উপর্যপুরি রামদায়ের কোপে গুরুতর আহত হয় নিহতের ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম (২৮)। রবিবার (১৮ জুন) রাতে উপজেলা সাতানী ইউনিয়নের বারকাউনিয়া গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই রাতেই ৬জনকে আটক করেছে। নিহত মালোয়েশিয়া প্রবাসী সুমন মিয়া(৩২) ওই গ্রামের জালু মিয়ার ছেলে।
দীর্ঘদিন যাবত সীমানা বিরোধ নিয়ে চলে আসা দ্বন্দের জেরে প্রতিপক্ষ যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জব্ইা করে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ নেতা ও তার পরিবারের লোকজনসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। রোববার রাত আট্টার দিকে উপজেলার বারকাউনিয়া গ্রামের ব্রীজের উপর এ লোম হর্ষক ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন মিয়া (৩২)
এদিকে এখবর এলাকায় পৌছে গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তবে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে তিতাস থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ৬ ঘাতককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বাড়ীর সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ জালু মিয়া ও আলাউদ্দিন গংদের সাথে বিরোধ চলছিল। কিছুদিন পূর্বে জালু মিয়ার একটি ঘরে আগুন দিয়ে তাদের উচ্ছেদের চেষ্টাও করা হয়। তখন একটি গাভি আগুনে পুড়ে মারা যায় এবং কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও ছাত্রলীগের প্রভাবশালীদের কারণে কোন আইনি সহযোগিতা পায়নি বলে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন। একসময়ের স্বাক্ষর জ্ঞানহীন ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা থেকে কুমিল্লা জেলা ও তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকে সন্তুষ্ট করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসীন হন আলাউদ্দিন । এরপরই উপজেলার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রভাব খাঁটিয়ে বারকাউনিয়া গ্রামের প্রতিপক্ষ জালু মিয়ার জায়গা দখল করে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করে। এনিয়ে শুরু হয় উভয় পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব নিয়ে থানায় একাধিক পাল্টাপাল্টি অভিযোগও রয়েছে।
এরই জের ধরে রবিবার (১৭ জুন) রাত ৯টার দিকে জালু মিয়ার ছেলে সুমন মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ীর উত্তর পাশের ব্রীজের উপড় আসলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ও তার ভাই রিপনসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা রামদা ও চাপাতি দিয়ে উপোর্যপুরি কুপিয়ে ও জখম করে তাকে। সুমনের চিৎকার শুনে তার ছোট তাকে বাঁচানোর এগিয়ে আসলে তাকেও এলোপাতারী কোপের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে গ্রামবাসি এসে উভয়কেই তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সুমনকে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে এবং ছোট ভাই সাইদুল ইসলামকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। ঘটনার পর এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনসহ অন্যরা তাদের বিল্ডিংয়ে আত্মগোপন করে। তখন বিক্ষোব্দ গ্রামবাসি বাড়িটি ঘেরাও করে তিতাস থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ৬জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো হলো, মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন (২৬), তার বড় ভাই মো. লিটন মিয়া (৩৩) ও মো. রিপন মিয়া (৩০), গনি মিয়ার ছেলে মো. ধনু মিয়া (৬০) ও তার ছেলে অনিক মিয়া (২১) ও মোহাম্মদ (১৯)। এবং আলাউদ্দিন এর মাÑবোন ভাবিদেরকে পুলিশি পাহারায় তাদের ঘরে আটক রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন সম্পর্কে খোজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের বারকাউনিয়া গ্রামের মৃত জলিল মিয়ার ছেলে
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বারকাউনিয়ায় সীমানা বিরোধ নিয়ে মারামারির ঘটনায় ১জন নিহত হয়েছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। ঘটনাস্থল থেকে ৬জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আর পড়তে পারেন